বৈজ্ঞানিক নামঃ  Apis indica

গোত্রঃ Apidae

মৌমাছি বা মধুমক্ষিকা বা মধুকর, বোলতা এবং পিঁপড়ের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত মধু সংগ্রহকারী পতঙ্গবিশেষ। 

এই মৌমাছি আমাদের সুন্দরবনের বনভূমির এক বিচিত্র বস্তুপুঞ্জ। যা দলবদ্ধভাবে উপনিবেশ তৈরি করে বসবাস করে। মৌমাছি একটি অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী পতঙ্গ। সুন্দরবনের মৌমাছি ওখানকার দরিদ্র মানুষকে বেঁচে থাকার রসদ জোগায়। বেঁচে থাকার প্রতিশ্রুতি মানুষকে টেনে নিয়ে যায় নিবিড় অরণ্যানীর গহিনে অবস্থিত মৌমাছির উপনিবেশে—যা ভরপুর থাকে মধুময় খাদ্যে, মানুষেরও আকর্ষণ ওই মধুতে।

প্রতি বছরের এপ্রিল মাসে মৌমাছি সুন্দর বনে এসে ভরে যায়, কারন এ সময়েই সুন্দরবন অরণ্য পুষ্পশোভিত হয়, অঢেল পুষ্পরস সংগ্রহ করা সম্ভব তাই ওই মৌমাছি প্রজাতির হাজার হাজার মৌমাছি সুন্দরবনে প্রবেশ করে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এপ্রিল মাসের মধ্যেই শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ মধু সংগৃহীত হয়ে থাকে। 

সুন্দরবনে অসংখ্য গাছের সমাহার। মৌচাক তৈরির জন্য মৌমাছি সব প্রজাতির গাছকে একইভাবে ব্যবহার করে না। গেওয়া গাছে ৩৯%, বাইন গাছে ১৬%, গর্জন গাছে ১১%, সুন্দরী গাছে ১%, গরান গাছে ৯.১%, কেওড়া গাছে ৫.৩% ও অন্যান্য গাছে ৩.৪% মৌচাক পাওয়া গেছে। অর্থাৎ গেওয়া গাছ মৌমাছিদের বেশি আকর্ষণ করে।

পাখির খাদ্যে মোমঃ

হানিগাইড নামে একটি প্রজাতির পাখির প্রধান খাদ্য মোম। হানিগাইড মৌচাক ভেঙে অথবা মাটিতে পড়ে থাকা ভাঙা মৌচাক সংগ্রহ করে খেয়ে থাকে। ওই পাখির খাদ্যনালীতে এক ধরনের ছোট ছোট উদ্ভিদ (Microflora) ও এক ধরনের yeast থাকে। ওই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও yeast হানিগাইডের খাদ্যনালীতে মোমকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ভেঙে হানিগাইডের প্রয়োজনীয় খাদ্য তৈরি করে। অন্য কোনও প্রাণী মোমকে তার খাদ্যতালিকায় রেখেছে কি না তা অজানা।